ডিভোর্স প্রসংগ বিদেশে থাকা স্বামীর ক্ষেত্রেঃ
স্বামী আমাকে ও আমার ছেলের শত্রুর মত দেখেন।উনি প্রচুর উপার্জন করেন ও বিদেশ ঘোরেন।
কিন্তু বিদেশে যাওয়ার সময় টাকা ও চেক বই ভাতিজাকে দিয়ে যান। অন্যদের জন্যে টাকাপয়সা বেহিসেবি খরচ করলেও আমাদের জন্যে নূন্যতম হাতখরচ দিতেও তার অনীহা।পরকাল,সমাজ ও সংসারের ভয়ে ডিভোর্স দেই নি।
আসলে সমাজ,সংসার বা পরকাল-এগুলোর অজুহাত দেয়া অর্থহীন।
স্বামীকে ডিভোর্স দেয়ার ক্ষেত্রে আপনার মূল বাধা হলো অর্থনৈতিক অবলম্বন এর অভাব। সে আর্থিক নিশ্চয়তা থাকলে, আত্মপরিচয় থাকলে, অবহেলা অপমান কেন মুখ বুজে সহ্য করবেন?
কোন স্বামী যদি স্ত্রীকে মর্যাদা না দেয় তাকে ক্রমাগত দাবী রাখে তাহলে একজন স্ত্রীর উচিত সেই অসম্মানের জীবন থেকে নির্দ্বিধায় বেরিয়ে আসা। কারণ আত্মসম্মানবোধ জলাঞ্জলি দিয়ে কখনো মানুষের মতো জীবনযাপন করা যায় না। কিন্তু আপনাকে তাই করতে হচ্ছে এবং নিজস্ব অর্থনৈতিক ভিত্তি না থাকার কারণে স্বামীকে ডিভোর্স না দেয়ার জন্য সমাজ সংস্কারের মত ঠুনকো অজুহাতে দেখাতে হচ্ছে। কারণ এ ছাড়া আপনার আর কোন উপায় নেই। এজন্যই লেখাপড়া শিখে নারীদের যোগ্য এবং আত্মপরিচয় সৃষ্টি করা গুরুত্বপূ্ণ ।
আমার এক আত্মীয় এবং তার স্বামী কর্মসূচির আগে অফিসে ছিলেন পদমর্যাদায় স্ত্রী ছিলেন সিনিয়র বদমেজাজি কর্মক্ষেত্রের ব্যবধানের কারণে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয় একপর্যায়ে সংসার ভেঙে যায় কর্মক্ষেত্রে রকম অসমতা থাকলে স্বামী-স্ত্রী দৃষ্টিভঙ্গি কি হওয়া উচিত?
এটি এক ধরনের মানসিক রোগ স্ত্রী তার চেয়ে উপরে উঠে গেছে এ নিয়ে অধিকাংশ স্বামী হীনমন্যতায় ভোগেন এসব স্বামীদের ধারণা হলো স্ত্রীরা তাদের চেয়ে ইনফেরিয়র হবে। তার স্ত্রীকে সহযোদ্ধা মনে করতে পারেন না আর যদি মনে করতেন তাহলে স্ত্রীর সম্মান কে নিজের সম্মান মনে করতে নেই স্ত্রী যদি স্বামীর চেয়ে বেশি পরিচিত হন তাহলে তো স্বামীর আনন্দিত হওয়া উচিত সবচেয়ে বেশি। এজন্য সব সময় সতর্ক হওয়া উচিত আপনি যদি স্ত্রীকে যথাযথ সম্মান করতে পারে তাহলে আপনার হীনমন্যতায় প্রকার কোন কারণ নেই। আর স্ত্রী স্বামীর চেয়ে উঁচু পদমর্যাদার হলেও স্বামীকে সহযোদ্ধা মনে করবেন সম্মানের দৃষ্টিতে দেখবেন অর্থাৎ পারস্পরিক সম্মান থাকতে হবে এটাই সত্যিকারের দৃষ্টিভঙ্গি।
আমার স্বামী খুব রাগী সুযোগে গেলে সব কিছুই করতে পারে রাগের মাথায় সে আমাকে ডিভোর্স দিয়ে দেয় কিছুদিন পরে সে বলে আমি রাগের মাথায় দিয়েছি, আমার মনের ভেতর ছিলো না আমি তাকে খুব ভালোবাসি ,বুঝি এরকম মানুষের কাছে থাকতে পারব না।
চেষ্টা করে তাকে ভুলে যাই আবার যখন আসে তখন বুঝতে পারিনা কি করব? ডিভোর্স কোন ছেলেখেলা নয়। স্বামী বা স্ত্রীর পক্ষে যদি কোনও ভাবেই আর একসাথে থাকা সম্ভব না হয়, তাহলে ইসলামে তালাক বা ডিভোর্সের বিধান আছে।
যার মাধ্যমে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে আলাদা হয়ে যাবেন কিন্তু এটা এত বড় সিদ্ধান্ত যে রাগের মাথায় তো নয়। অনেক ভেবেচিন্তে সময় নিয়ে যেতে বলা হয়েছে,বলা হয়েছে ফুটন্ত লাগবে তিন মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর চূড়ান্ত তালাক দিতে ।
একবারে তিন তালাক দিলে তা কার্যকরী হবে, কিন্তু সে জন্য স্বামীকে শাস্তি পেতে হবে।
হযরত ওমর রাঃ এর সময় একজন তার স্ত্রীকে রাগের মাথায় তিন তালাক বলে ফেলল। হযরত ওমর রাঃ ঘটনা শুনে রায় দিলেন তাকে শাস্তি পেতে হবে।
কারণ সে তার স্ত্রী তিন মাসের অধিকার লংঘন করেছে তার শাস্তি হলো ৮0 দোররা।
খেলাফত আমলে পরবর্তীতে আর কখনো আরবে এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি।
আমাদের দেশে প্রচলিত পারিবারিক আইন অনুযায়ী তালাক কার্যকর হতে হবে তার লিখিত হতে হবে এবং তিন মাস সময় দিতে হবে।
এ তিন মাসের মধ্যে যেকোনো সময় তা প্রত্যাহার করে নেওয়া যাবে। ইতিহাসের মধ্যে যেকোনো সময় তা প্রত্যাহার করে নেয়া যাবে। কিন্তু এখানে মানুষের কতটা গুরুত্বপূর্ণ কোনো সমস্যা তিনবার তালাক এর অপেক্ষা না করে একবার তালাক বলার পরই তো একজন মর্যাদাসম্পন্ন নারী সেখান থেকে চলে যাওয়ার কথা।
সেখানে সম্মান এবং শ্রদ্ধাবোধ নয় সেখানে একজন নারী কেন থাকবে এবং স্ত্রীর মধ্যে যদি পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ না থাকে সেখানে কখনো শান্তি আসে না।
এত এখন এত কিছুর পরও আপনি যত স্বামীকে ভালবাসেন। সেহেতু তাকে বলতে পারছ না তো কষ্ট বলুন বলুন তো আপনাকে সহ্য করতে হবে। এখানে অন্য কেউ সিদ্ধান্ত দেয়ার অধিকার রাখেনা।
আমার একাত্তের বেশ কয়েক বছর ধরে স্বামী থেকে ফিরছেন না তার স্বামীকে নিজের প্রেমে পড়েন, সম্প্রতি তিনি নাকি বিয়েও করেছেন। কিন্তু মেয়েটির আত্মীয়তা কে বলেছে, তোমার কাছে ফিরবে যদিও তার ফেরার কোনো লক্ষণ নেই। তবে মেয়েটি তার স্বামীকে মনে মনে ক্ষমা করছে এখন স্বামী যদি ফিরে আসে তা হলে কি করনীয়?
চিন্তা তো মেয়েটিকে নিয়ে না চিন্তা তো আপনার বেশি দেখা যাচ্ছে।
মেয়েটির চাপ নারী বেশি দেখা যাচ্ছে মেয়েটির স্বামী অন্যত্র বিয়ে হয়ে গেছে। পরনারীতে আসক্ত তারপর আর কোন লক্ষণ নেই মেয়েটি তার কাছে বিচ্ছিন্নতার প্রসেসর ফিরতে পারে এবং পেলে মেয়েটি তাকে গ্রহণ করবে কিনা এরকম সুদূরপরাহত সম্ভাবনা এবং ভাবনা নিয়ে তো অন্যদের বিচলিত হওয়ার সুযোগ নেই পুরো সিদ্ধান্ত এবং যা চাইবে তাই হবে অন্যদের ব্যাপারে মাথা ঘামিয়ে লাভ নেই।