বিয়ের আগে করনীয় বর্জনীয় সেরা ৫ টি উপদেশ

বিয়ে সারাজীবনের সম্পর্ক ।তাই বিয়ের ক্ষেত্রে সবাই একটু বেশি ভাবনা চিন্তা করে আগায়।আজকালকার দিনে আমরা বিয়ের বেশ কিছু পর্ব দেখি ,যেমন এনগেজমেন্ট, মেহেদি , গায় হলুদ , বিয়ে এবং বউভাত বা ওয়ালীমার অনুষ্ঠান ।

মুলত পাত্র পাত্রীর দেখা শোনার পর এনগেজমেন্ট করা হয়।এটাকে ধরা হয় বিয়ের প্রথম ধাপ। এনগেজমেন্ট এর পাত্র বা পাত্রী নিজেদের ভেতরে যোগাযোগের মাধ্যমে একে অন্যের সম্পর্কে জেনে নেয়।

তবে বিয়ের ক্ষেত্রে এই জানা শোনাটা শুরুর দিকে হয়ে যাওয়াটা ভালো। এর বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে।যেমন ধরুনঃ

  • একটি মেয়ে কিংবা একটি ছেলের এনগেজমেন্ট হয়েছে ,এর পর তারা একে অন্যের সাথে ফোন নম্বর বিনিময় করে নিজেরা নিজেদের সাথে কথা বলল .২ একবার দেখাও করে নিল।এ দিকে দুজনের বাড়িতেই চলছে বিয়ের আয়োজন। আত্মীয়দের মধ্যেও চলছে সাজ সাজ রব ।ঠিক এই মুহূর্তে মেয়ের মানুষিকতার সাথে ছেলের মানুষিকতার মিল হল না,তারা চাইছে বিয়েটা ভেঙ্গে দিতে। কিন্তু এই সময় বিয়ে ভাঙলে সামাজিক ভাবে মেয়ের পরিবার কিছু জটিল পরিস্থিতির শিকার হতে পারে। ছেলে বা মেয়ের পরবর্তী বিয়ের দেখা শোনার সমস্যা ও হতে পারে।
  • পারিবারিক সিধান্তে ছেলে মেয়ের বিয়ে ঠিক হল ,হল এনগেজমেন্টও । কিন্তু মেয়ে অন্য কাউকে পছন্দ করে,পারিবারিক চাপে পড়ে যদি বিয়ে ও হয় তবে আদতে কি সুখ আসবে?
  • যে মানুষ দুটি একে অন্যের সাথে সারাটা জীবন কাটাবে বলে ঠিক করে,তারা আদতে সারা জীবন থাকতে পারবে কিনা সেটা কখনোই আগে থেকে বলা যায় না।তবে তাদের বোঝা পড়া কেমন হতে পারে সেটা আঁচ করা যায় কয় একটা দ্বীন তার সাথে কথা বললে। আর তাই কোন সিধান্ত নেবার আগেই দুজনের দেখা শোনা করাটা জরুরী ।
  • এছাড়া বিয়ের কথা পাকা হবার পর তা ভেঙ্গে গেলে উভয় পরিবারের আর্থিক ভাবেও ক্ষতি হয়।

তাই দেখা শোনা যা করার তা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগে সেরে ফেলাই ভালো।

কী কী বিষয়ে অভিভাবকদের খোঁজ-খবর নেয়া জরুরিঃ

  • বর-কনের বিয়ের মূল অভিভাবক শরিয়তসম্মত বৈধ ব্যক্তি কি না? তা জেনে নিতে হবে বিয়ে ঠিক হবার আগেই।
  • রাষ্ট্রীয় আইনানুসারে বর ও কনে উভয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক কিনা ।
  • বরের একাধিক কিংবা ৪ স্ত্রী বর্তমান থাকাবস্থায় এটা পঞ্চম বিয়ে কিনা?একাধিক বিয়ের ক্ষেত্রে আগের স্ত্রীর সম্মতি আছে কিনা?
  • কনের আগে বিয়ে হয়েছে কিনা? বিয়ে হয়ে থাকলে সে সম্পর্ক এখনও বিদ্যমান আছে কিনা?
  • পাত্র/ পাত্রীর সম্পদ ও সামাজিক অবস্থানের চেয়েও গুরুত্ব সহকারে খোঁজ নিতে হবে পাত্র/পাত্রীর  শিক্ষা, আদর্শ, মূল্যবোধ ও নৈতিকতার। দেখতে হবে  মাদক, ঋণ ও ভার্চুয়াল ভাইরাসসহ সব ধরনের আসক্তি থেকে মুক্ত কিনা।
  • সঙ্গীর আর্থিক অবস্থা কেমন সেটা বিয়ের আগেই জানা উচিত। যদিও একজনের বেতন বা আয় জিজ্ঞেস করাটা অনুচিত তারপরও বিয়ের আগে এই বিষয়গুলো পরিষ্কার হওয়া উচিত।
  • বিয়ে মানেই জীবন ফুরিয়ে যাওয়া নয়। বিয়ে মানে নতুন একটি অধ্যায়ের শুরু। একটাই জীবন, সবার আজন্ম লালিত কিছু স্বপ্ন থাকে। সেই স্বপ্নগুলোর কী হবে সেটা আগেই জেনে রাখা ভালো। তার ক্যারিয়ারের জন্য সে কতটা উদগ্রীব তা জেনে সঙ্গী করা উচিৎ।

এতো গেলো কি কি বিষয় জানতে হবে?এবার আসি কোন কোন বিষয় সংযত হতে হবে?

বিয়ের আগে করনীয় - বর্জনীয় সেরা ৫ টি উপদেশঃ

বিয়ে করার আগে আমাদের অনেক কাজ আছে যা করা দরকার, আবার অনেক কাজ আছে যা বর্জন করাও দরকার চলুন জেনে নেই, বিয়ের আগে করনীয় - বর্জনীয় সেরা ৫ টি উপদেশ কি কি।

  • প্রথমেই বলতে চাই বিয়ের কথা পাকা হওয়ার আগে দেখাদেখির খবরটি যত কম মানুষ জানবে তত ভালো। অনেক সময় দেখা যায় বেশি মানুষ জানার কারণে মেয়ে/ছেলের পরিবারের জন্য নেতিবাচক কিছু হয়ে থাকে। কারণে ও অকারণে ছেলে/মেয়ের নামে অনেক উল্টা-পাল্টা কথা বলে বিয়ে ভাঙ্গার পরিস্থিতি সৃষ্টি করে দেয়।  
  • হঠাৎ করে ছেলে বা মেয়ের কর্মক্ষেত্রে/ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তাকে অপ্রস্তুত করা একেবারেই ঠিক হবে না। এতে করে জিনিসটা হিতে বিপরীত হয়ে যায়।
  • মুসলিম বিয়ের ক্ষেত্রে দেনমোহর স্বামীর জন্যে একটি দায় বা ঋণ।তাই দেনমোহরের পরিমাণ বরপক্ষের সাধ্যের মধ্যে হওয়া উচিৎ । অনেক সময় মেয়ে পক্ষ জোর করে ছেলে পক্ষের উপর চাপিয়ে দেয়, এতো টাকা দিতে হবে, এতো করতে হবে, এইটা মাছের বাজার না যে দামা-দামী করবেন, দুই পরিবার আগ থেকেই যত কম করা যায় ততো পরিমাণ টাকা দেওয়ার চুক্তি সেরে নিতে হবে।
  • বিয়ের কথা পাকা হওয়ার পর ছেলে ও মেয়েকে আলাদা কথা বলার সময় করে দিতে হবে, বিয়ের আগে যতদিন সময় থাকবে সে সময়ে একে অপরের সাথে মানিয়ে নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। ছেলে/মেয়ে একে অপরের সাথে মিশলে বুঝতে পারবে, ভালো খারাপ দিক গুলি, তাহলে বিয়ের পর সংসার সুখের হবে।
  • দুই পরিবারকে সমানভাবে খরচ বহন করার মানুসিকতা থাকতে হবে। ছেলে পক্ষের উচিত ভিক্ষুকের মত যৌতুক না চাওয়া, কোন কিছু না চাওয়া। পরিবারের মধ্যে মেয়েকে নিতে হবে আপন মেয়ের মত করে, ঠিক ছেলেকেও নিতে হবে আপন ছেলে মনে করে। সংসারে অশান্তি আসে দুই পরিবারের এইসব অমানুষিক কার্যকলাপের কারণে।

বিয়ে এক সামজিক বন্ধন বিয়ের মাধ্যমে নতুন একটি পরিবার গঠিত হয়। আত্মীয়তার সম্পর্ক তৈরী হয় দুটি পরিবারের মধ্যে ।তাই  বিয়ের পরে স্বামী/ স্ত্রী ছাড়াও দুই পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে সময় কাটানোও প্রয়োজন।  নতুন আত্মীয়দের  বোঝার মাধ্যমে স্থাপিত হবে  সুসম্পর্ক ।

SCAN TO VIEW

OUR OFFICES