বিয়ের খরচঃ বনাম সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি
আমার আত্মীয় পরিমণ্ডলে সম্প্রতি যে বিবাহ হয়েছে তা খুব ধুমধাম হয়েছে। এর মধ্যে দিয়ে অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, একটি বিয়ের জন্য একাধিক ব্যয়বহুল অনুষ্ঠান এবং খরচের প্রতিযোগিতা করাটা যেন বাধ্যতামূলক। কিন্তু আমাদের এত আর্থিক সামর্থ্য নেই। তাহলে কি আমাদের হীনমন্যতায় ভোগা উচিত?
আপনাদের হীনমন্যতায় ভোগা আর কিছু নেই; বরং হীনমন্যতায় ভোগা উচিত তাদের, যারা এ ধরনের অপচয় লিপ্ত।
কারণ বিয়ে জীবনের একটি সহজ,একটি স্বাভাবিক ঘটনা।প্রকাশ করার জন্য আত্মহত্যা ছাড়া কিছুই নয়। একটি সাভাবিক ঘটনাকে আকাশকুসুম মনে করা খরচ,ধুমধাড়াক্কা অপচয় শুধু অকল্যানই বয়ে আনে।
যে বিয়েতে ধুমধাড়াক্কা অপচয় বেশি,সে বিয়েতে সাধারনত সুখের পরিমান তত কম।
আসলে ভোগবাদী পন্য আগ্রাসকরা নিজেদের ব্যবসায়ীক স্বার্থেই ভোজন, বিনোদন এবং জৈবিক চাহিদা পূরণকে জীবনের সবচেয়ে গুরুতবপূর্ন বিষয়।
বিয়ে হচ্ছে জৈবিক চাহিদা পূরণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে প্রচার করতেন। মিডিয়াকে ব্যবহার করছেন জন্য ভিডিওতে কাল্পনিক হিসেবে বিশাল ব্যাপার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বিয়ের জন্য প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠে তার মধ্যে প্রথম।
আপনি যাতে প্রচুর অপব্যায় করতে পারেন, সেজন্যই ম্যারেজ ম্যানেজমেন্ট ফার্ম গড়ে উঠেছে। একটা বিয়েতে কত ভাবে অপচয় করা যায়, এই পরামর্শ দানে তাদের কোনো জুড়ি নাই। একটিমাত্র বিয়ের জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয়। একাধিক অনুষ্ঠান আয়োজনের পাশাপাশি পোশাক ও অলংকার কেনাকাটা করতে গিয়ে হয় টাকার শ্রাদ্ধ। ঋণ করে হলো বিয়ের এই ফোরামে করতে গিয়ে অনেকে এবং অনেক পরিবার ঋণের চাপে দুর্দশায় নিমজ্জিত হয়।
ইদানিং বিয়ের খরচ নতুন সংযোজন হলো হীরা। হীরা চিরকালের এই জাতীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে বহুজাতিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হয়তো এটা বোঝাতে চাইছে, হীরা ছাড়া বিয়ের পরিপূর্ণ হয় না এবং হীরার বন্ধনকে চিরস্থায়ী করে। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে, আসছে সম্পদশালী পাশ্চাত্য সমাজে পঞ্চাশের দশক থেকে বিয়েতে অপরিহার্য অনুষঙ্গ ।আগ্রহীরা সেখানে অন্য যে কোনো সময়ের তুলনায় বিয়ের বিচ্ছেদের হার এই সময়ে সবচেয়ে বেশি।
অ্যাস্ট্রোলজি গবেষণার একটি ফলাফল দিচ্ছে শতকরা ৯৫ ভাগ ক্ষেত্রে বিয়েতে হীরকের প্রভাব অসম্ভব আর এর ব্যাখ্যা হলো প্রতিটি পাথরের একটি দ্রব্য গুন আছে যা একজন মানুষের মানসিকতার উপর প্রভাব বিস্তার করে।তেমনি হীরকের অনুদৈর্ঘ্য গ্রহণযোগ্য হতে পারে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সহমর্মিতা ও সমঝোতার মনোভাব একটি স্বপ্নের জন্যে অপরিহার্য তার উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে বিয়েতে হীরা দেয়া আর খাল কেটে কুমির আনা একই কথা।
আসলে বিয়েটি সাধারণ ও স্বাভাবিক ঘটনা যার মাধ্যমে নর-নারীর জৈবিক চাহিদা পূরণের ব্যাপারটি সর্বজন গ্রহণযোগ্য তা পায়। একে মহিমান্বিত করতে গিয়ে একাধিক ব্যয়বহুল অনুষ্ঠান এবং লোকদেখানো খরচের প্রতিযোগিতায় মত্ত হওয়া নির্বুদ্ধিতার প্রকাশ।